ভায়োলেশন মামলা কাকে বলে:
ভায়োলেশন মামলা কাকে বলে : দেওয়ানী আদালতের আদেশ – নিষেধাজ্ঞা – রায় বা ডিক্রি ভঙ্গের কারণে বিবাদীর বিরুদ্ধে আদালতের মাধ্যমে যে প্রতিকার চাওয়া হয় তাকেই ভায়োলেশন মামলা বলা হয়।
মনে করুন: আপনি আপনার প্রতিবেশির সাথে জমি জমা সংক্রান্ত একটি বিষয়ে বিরোধের সংক্রান্ত মামলা হয়েছে । দুই পক্ষের মধ্যে মামলা চলমান আছে যাহা এক পর্যায়ে ইনজেকশন জারি রয়েছে তথা: আদালতের কাছে এই মর্মে নিষেধাজ্ঞা চেয়েছিলেন যেহেতু আপনি জমির দখলে আছেন এবং আপনার কাছে জমির কাগজ পত্রাদি ও রয়েছে সুতরাং মামলার চূড়ান্ত নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জমির ভোগ দখলে যাতে আপনার প্রতিবেশী- বিবাদী কোনরুপ হস্তক্ষেপ না করতে পারে সেই মর্মে তাকে আদেশ দেওয়া হোক। আদালত দুই পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে আপনার পক্ষে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারী করলেন এবং বিবাদীকে এই মর্মে নির্দেশ দিলেন যে, তিনি যেন পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত আপনার ভোগ দখলে বাঁধা না দেয়।
কিন্তু আদেশ দেওয়ার কিছু দিন না যেতেই বিবাদী কিছু লোক জন নিয়ে উক্ত মামলাকৃত জমিতে প্রবেশ করেন এবং ঘর বাড়ী অথবা গাছপালা – শস্যক্ষেত্র- ফলফলাদী ভাংচুরসহ ফসল কেটে নিয়ে চলে জান – শুধু তাই নয় আপনাকে বিভিন্ন ভাবে শাসিয়ে যায় এবং জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য হুমকি দেয় আপনি যদি তিন দিনের মধ্যে জমি ছেড়ে না দিলে আপনাকে দেখে নেওয়া হবে। অর্থাৎ তিনি আদালতের নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করেছেন।
আলোচ্য বিষয়ঃ আমি এখানে দেওয়ানী মামলার প্রতিকার পর্যায়ে আলোচনার সূত্র ধরে দেওয়ানী আদালতের ক্ষমতা – দায়িত্ব ও আইনগতভাবে কিভাবে পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ সে বিষয়ে আলোকপাত করব।
আপনার দেওয়ানী প্রতিকার: এখানে আপনার নিযুক্ত আইনজীবীর মাধ্যমে উক্ত বিবাদীর বিরুদ্ধে ভায়োলেশন কেইস করতে পারবেন। অর্থাৎ: দেওয়ানী আদালতের আদেশর – নিষেধাজ্ঞা – রায় বা ডিক্রি ভঙ্গের বিরুদ্ধে আদালতের মাধ্যমে বিবাদীর বিরুদ্ধে যে প্রতিকার চাওয়া হয় সেটাই ভায়োলেশন মামলা। ভায়োলেশন মামলায় আদালত বিবাদীর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ছয় মাসের দেওয়ানী কারাদন্ডের আদেশ সহ অর্থদণ্ড দিতে পারেন।
ভায়োলেশন মামলার প্রকৃতি: এই প্রকৃতির মামলায় আদালতের ক্ষমতাকে প্রায় ফৌজদারি প্রকৃতির ক্ষমতা বলা হয়। অর্থাৎ ভায়োলেশন কেইসে আসামীকে মূল দন্ড হিসাবে কারাদন্ডের আদেশ দিতে হলে সচরাচর দেওয়ানী মামলায় অনুসৃত নিয়মের বাইরে ও আপনাকে আরো কিছু নিয়ম মানতে হবে যা অনেকটা ফৌজদারী আদালতের বিচারিক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
১। ভায়োলেশন মামলায় দেওয়ানী আদালত এমন ভাবে সাজাবেন যাতে করে ফৌজদারী মামলায় চার্জের সকল উপাদানগুলো সেখানে নিহিত থাকে। অর্থাৎ: সমায় – স্থান – বিষয় এই তিনটা বিষয় তুলে ধরতে হবে সঠিকভাবে সাথে সাথে ঘটনার সকল তথ্যদি তুলে ধরতে হবে। এভাবে মামলা সাজানোর উদ্দেশ্য হলো: বিবাদী যাতে করে কোনো ধরনের অযুহাত না দেখাতে পারে । কেননা এখন এই মামলা দেওয়ানী মামলার রুপ থেকে ফৌজদারী মামলায় রুপ গ্রহন করবে ।
২। মনে রাখতে হবে যে, দেওয়ানী আদালত এখন এই মামলার বিচার করলেও মামলার প্রকৃতি এখন আর দেওয়ানী নয়। সুতরাং: বিবাদী আদালতের যে নির্দেশ অমান্য করে নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করেছে এটা বাদী-দরখাস্তকারীকেই তা প্রমাণ করতে হবে। বাদীকে এখানে দেখাতে হবে যে: নিষেধাজ্ঞার আদেশ সম্পর্কে বিবাদী- ইনজাংশনভঙ্গকারী ওয়াকিবহাল ছিলেন এবং তিনি জ্ঞাত: আদালতের এই নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করেছেন।