জরিপ ও রেকর্ড প্রণয়নের ধাপসমূহ:
জরিপ কার্যক্রমের মাধ্যমে রেকর্ড প্রণয়নের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে দুইটি বিষয়।
প্রথমত: জমির অবস্থান আয়তন ও শ্রেণী পরিবর্তন এবং নকশা সংশোধন করে মৌজা ভিত্তিক নতুন নকশা প্রণয়ন করা।
দ্বিতীয়ত: জমির মালিকানা পরিমাণ ও শ্রেণীর সম্বলিত খতিয়ান প্রণয়ন করা।
উভয় অংশ মিলে একত্রিত সত্যলিপি বা রেকর্ড অব রাইটরস্ বলা হয়। একটি ক্যাডাস্ট্রাল জরিপ কার্যক্রম বিভিন্ন স্তরের সম্পাদিত হয় ১৯৫৫ সালের প্রজাস্বত্ব বিধিমালয়ের ২৭ বিধি মোতাবেক নিম্ন বর্ণিত স্তরসমূহ অনুসরণ করে এবং ১৯৫৭ সালের জরিপ টেকনিক্যাল রুলস এর বিধি মোতাবেক প্রতিটা স্তরের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে সর্তকতার সাথে জরিপ কার্য্য সম্পন্ন করতে হয়।
জরিপের সকল স্তরসমূহ:
(ক): ট্রাভার্স সার্ভে: জরিপ সম্পূর্ণ করার ক্ষেত্রে এই স্তরের কার্যক্রম গ্রহণ করতে হয়। জরিপ কাজে নিয়োজিত আমিনগন প্রথম সরেজমিনের জরিপের জন্য নির্ধারিত মৌজায় সীমানার চতুর্দিকে এবং মৌজার ভিতর কয়েকটি খুঁটি স্থাপন করেন। এবং থিওডোলাইট যন্ত্রের সাহায্যে খুঁটির সমূহের কোন এবং পরস্পরের দূরত্ব মেপে কম্পিউশনের মাধ্যমে ট্রাভার্স খুটির স্থানাঙ্কের নির্ণয় করেন । এই স্থানাঙ্কের সাহায্যে পি-৭০ সিট প্রস্তুত করা হয় । এবং আমিনগন পরে এই শীটের উপরে মাঠে কেস্তোয়ারা করেন ।
অপরপক্ষে: সংশোধনী জরিপের ক্ষেত্রে সাধারণত আবার ট্রাভার্স প্রয়োজন হয় না ।
কারণ বিগত জরিপের প্রস্তুত করা মৌজা নকশার উপর ব্লুপ্রিন্টের মাধ্যমে উক্ত নকশার দাগ সমূহ অঙ্কন করা হয় । এবং মালিকানা পরিবর্তন করা হয়।
এবং উপর ভিত্তি করে পূর্বের মালিকানা বাদ দিয়ে নতুন মালিকানার নাম হালনাগাদ করে নতুন খতিয়ান প্রণয়ন করা হয়।
এবং এই সকল কাজ সরেজমিন কেস্তোয়ারার মাধ্যমে করা হয়। শুধুমাত্র মৌজা বা কোন এলাকার কোন অংশে যদি এক-তৃতীয়াংশের বেশি ভৌগোলিক পরিবর্তন সাধিত হয়। বা নতুন চর বা ভূমি জাগলে তখন ট্রাভার্স সার্ভে করার প্রয়োজন পড়ে। এভাবেই ট্রাভার্স সার্ভের কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।
(খ) : ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে: এই স্তরে জরিপ কর্মীগণ ট্রাভার্স সার্ভের মাধ্যমে যে পি ৭০ সিট প্রণয়ন করেছিলো তার ওপর ভিত্তি করে এই কেস্তোয়ারা করতে হয়। প্রথমে পরিমাপ করে দেখতে হয় পি ৭০ সিটের যে ট্রাভার্স স্টেশন গুলো দেখানো হয়েছে তার সাথে সরেজমিনের স্থাপিত স্টেশন বা খুটি গুলোর দূরত্বর দিক থেকে স্কেল অনুযায়ী সমপরিমাণ অর্থাৎ ঠিক আছে কিনা তাহা দেখতে হবে। যদি সঠিক হয় – তাহলে সিটের পরিমাপ সঠিক বলে ধরে নিতে হবে।
অতঃপর: খুটির অবস্থান সমূহ্যকেকে ক্রমান্বয়ে সংযোজন ঘটিয়ে সরেজমিনে ও শীটে মৌজার একটি সীমানার কাঠামো দাঁড় করাতে হবে।
যাতে বহুভুজ তৈরি করা যায়।
এবং এই বহুভুজকে সরজমিনের শীটের সুবিধাজনকভাবে কয়েকটি মোরব্বা বা চতুর্ভুজে বিভক্ত করা হয়।
অতঃপর: বহুভুজের বাহু ও সিকমি লাইন ধরে গানটার চেইন / ফিতা / পরিমাপের যন্ত্র ধরে দিক নির্দেশনা কারি কম্পাস বা বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জামের সাহায্যে ওই মৌজার প্রতিটি
ভূমি খন্ডকে খন্ড খন্ড করে সঠিকভাবে পরিমাপ করে ভূমির অবস্থান ও আয়তন সম্বলিত নকশা প্রণয়ন করতে হবে।
এর মাধ্যমে একটা মৌজার প্রতিটি জমির বাস্তব প্রতিনিধিত্বমূলক প্রতিছবি নকশা পাওয়া যায়- আর এ সকল কাজকেই বলা হয় কেস্তোয়ারা বা ক্যাস্ট্রাল সার্ভে।
(গ): সীমানা চিহ্ন নির্মাণ: কেস্তোয়ারা সম্পূর্ণ হলে মৌজার পূর্বের নকশা অথবা পার্শ্ববর্তী মৌজার নকশার সাহায্যে সংলগ্ন তিন মৌজার সীমানার সংযোজনস্থলে ত্রিসীমানার পিলার স্থাপন করা হয় । মৌজার আয়তন খুব বড় হলে মৌজার সীমানার ভিতরেও কিছু স্থায়ী পিলার স্থাপন করতে হয় এসব পিলারের অবস্থান নকশা চিহ্নিত করতে হয়।
(ঘ): খানাপুরের কাজ:
খানাপুরি করা বলতে বোঝায় খান বা শূন্যস্থান পূরণ করা অর্থাৎ কেস্তোয়ারা কৃত পি-৭০ শীটের অথবা ব্লুপ্রিন্ট শীটের প্রত্যেকটি ভূমি খণ্ড একটি করে নাম্বার দেওয় হয়। এই নাম্বারকে কিস্তোয়ারাকৃত মৌজার নকশার উত্তর-পশ্চিম কোন থেকে শুরু করে ঐ সারির ডান দিকে অগ্রসর হয়ে সারি শেষ করে নির্ম্নের সারিতে গমন করে আবার বাদিক থেকে অগ্রসর হতে হবে এভাবেই পর্যায়ক্রমে প্রতিটি সারিতে নাম্বার প্রদান করে সর্বনির্ম্ন দক্ষিণ-পূর্ব কোণে সাধারণত নাম্বার প্রধান শেষ করতে হবে।
এই নাম্বার গুলোকে দাগ নাম্বার বলে এই স্তরের আরেকটি কাজ সম্পাদিত হয়। তাহা হলো ঐ সময় ভূমির মালিকের নামে খতিয়ান প্রস্তুত করা। আর সেজন্য- মালিকের নাম – ঠিকানা – জমির শ্রেণী – জমির পরিমাণ – মালিকের মোট জমি – ইত্যাদির তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়।
দাগে ভূমির পরিমাণ কত তাহা এই স্তরে লেখা হয়না। এই স্তরের পরে লেখা হয়।
কিন্তু: ব্লুপ্রিন্ট শীটের পরিবর্তে ট্রাভাস দৈর্ঘ্যের মাধ্যমে যদি কেস্তোয়ারা করা হয় তাহলে দাগের ভূমির পরিমাণ নির্ণয়ের জন্য খানাপুরির পর উক্ত শীটটি এরিয়া স্টেটমিটার এর কাছে প্রেরণ করা হয়। এবং খতিয়ান এবং দাগের জমির পরিমান লেখা হয় । এ সময় যে খতিয়ান প্রণয়ন হয় তাকে বলে খসড়া খতিয়ান ।এই স্তরে খতিয়ান নীল ও কালো কালিতে লেখা হয়।
(ঙ): বুঝারত: বুঝারত অর্থ বুঝিয়ে দেওয়া বুঝার স্তরে ভূমির মালিকগণকে তাদের ভূমির হিসাব বুঝিয়ে দেওয়া হয় – অর্থাৎ খানাপুরের স্তরের পর আলাদা ভাবে প্রতেক ভূমি খন্ডের ভূমির পরিমাণ কত তাহা নির্ণয় করে খতিয়ানে লেখা হয়। বুঝারত স্তরে উক্ত খসড়া খতিয়ানের একটি অনুলিপি সংশ্লিষ্ট ভূমির মালিক কে নির্ধারিত তারিখে স্থানীয়ভাবে বিতরণ করা হয়।
এই স্তরে পূর্বের জরিপে যে খতিয়ান হয়েছিল হবার পূর্ব পর্যন্ত ওই রেকর্ড বা নামজারীর মাধ্যমে হাল পর্যন্ত যেভাবে সংশোধন করে রাখা হয়েছে – সে খতিয়ান এবং বর্তমান প্রস্তুত খতিয়ানের কোন তারতম্য বা ব্যাতিক্রম হলে তাহা কি কারণে হয়েছে সে সকল ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন হয় ।এবং কোনো ছোটখাটো ত্রুটি থাকলে তাও সংশোধন করা হয়। সরদার আমীন বুঝারতের কাজ করে থাকেন এবং তার সহকারী হিসাবে একজন বদর আমিন এবং একজন চেইনম্যান দেওয়া হয়। এই স্তরে খতিয়ান বা খসড়ার কোন পরিবর্তন করতে হলে তার সবুজ কালিতে করতে হয়।
(চ): তসদিক: বুঝারতের স্তরের পর হলো তসদিক স্তর এই স্তরে বুঝরাতের সময় যে খসড়া খতিয়ান বিলি করা হয়েছিল তার শুদ্ধতা ও সত্যায়নের জন্য মৌজার সংশ্লিষ্ট জমির মালিকগণকে পূর্বনির্ধারিত তারিখে নির্ধারিত স্থানে উপস্থিত হইয়া খতিয়ান তসদিক করিয়ে নিতে হয়। এই স্তরের কাজ করেন একজন কানুনগো এবং উপসহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার। কোনো মৌজার তসদিক করার পূর্বে কোন তারিখে কত নাম্বার থেকে কত নাম্বার পর্যন্ত খতিয়ান তসদিক করা হবে তা নোটিশ আকারে তসদিক ক্যাম্পে টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়।
সাধারণত সংশ্লিষ্ট মৌজার তথ্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় বা তহসিল অফিসে স্থাপন করা হয়।
উক্ত ক্যাম্পে কর্মকর্তাগণ নির্ধারিত কাজ করেন এবং প্রত্যেকদিন প্রস্তুত কার্যক্রম শুরু হওয়ার পূর্বের দিনের নির্ধারিত খতিয়ানের কপি (মাঠ-পর্চা) প্রতেক ভূমির মালিকগণ তসদিক কর্মকর্তার কাছে জমা দেন । তসদিক কর্মকর্তা প্রত্যেকটি খতিয়ান পরীক্ষা করেন ও অন্যান্য রেকর্ড সমূহ্য তুলনা করেন এবং ভূমির মালিকদের দাখিলকৃত কাগজপত্র দেখে প্রয়োজনে খতিয়ান পরিবর্তন বা সংশোধন করে খতিয়ান তসদিক করেন।
খতিয়ানে কোন তথ্যগত ভুল থাকলেও এই স্তরে তা সংশোধন করা হয়। খতিয়ান বা পর্চায় এবং জমির নকশায় এই সময় স্বাক্ষর এবং অফিসিয়ালি সিল প্রদান করেন। তসদিক হওয়ার আগে খতিয়ানে কোনোপ্রকার ভূল ধরা পরলে তাহা নির্দৃষ্ট ফরমে আবেদন করতে হয় এই স্তরে কোনো প্রকার কোর্ট ফি বা টাকা লাগে না । তসদিক কর্মকর্তাগণ নির্দিষ্ট দিন ধার্য্য করিয়া উভয় পক্ষকে ডাকিয়া উভয় পক্ষের মিলিতভাবে শুনানির মাধ্যমে সেটা নিষ্পত্তি করা হয়। এবং উক্ত খতিয়ানের ভুল সংশোধন করা হয়।
(ছ): যাচ: তসদিক স্তরের কাজ সমূহ শেষ হবার পর মৌজার তসদিকৃত খসড়া – খতিয়ান সমূহ সরকারি সেটেলমেন্ট অফিসার বা সেটেলমেন্ট অফিসারের অফিসের নিরীক্ষা করা হয় বা যাচায় করা হয়। যাচ মহরারগণ এই কাজ করেন এবং সেই মোতাবেক যাচ অফিসার তার সংশোধন করেন। এই স্তরের কাজে খতিয়ানের হাল ও সাবেক দাগ নম্বর জমির শ্রেণীর জমির পরিমাণ ইত্যাদি বিবরণ সম্বলিত – খতিয়ানের বিবরণ সঠিক আছে কিনা – জমির দাগ নাম্বার বাদ পড়ছে কিনা – তাহা যাচাই করে খতিয়ানের সভ্যতার সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হয়।
(জ): খসড়া খতিয়ান প্রকাশ: তসদিককৃত বা সত্যায়িত খসড়া খতিয়ান যাচ বা নিরক্ষার পর প্রজাস্বত্ব বিধিমালা ১৯৫০ এর ২৯ বিধি মোতাবেক নির্ধারিত তারিখ হতে ৩০ দিনের জন্য নির্ধারিত প্রকাশ্য স্থানের জনসাধারণের জন্য পরীক্ষা করার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। এই কার্যক্রমকে বলা হয় খসড়া প্রকাশ। খসড়া প্রকাশনের পূর্বে খতিয়ান গুলো সাজানো হয় এবং খতিয়ানের নাম্বার পরিবর্তন করা হয়।
খসড়া প্রকাশনের পূর্বে যে নাম্বারটা থাকে সেটাকে বলা হয় বুঝরাত নাম্বার। এবং পরের নাম্বার কে বলা হয় ডিপি তথা ড্রাফ্টিং পাবলিকেশন নাম্বার ।
এ সময়ে ভূমির মালিকগণ প্রকাশনা ক্যাম্পে রক্ষিত খতিয়ান বা খসড়া – নকশা – ইত্যাদি দেখার সুযোগ পেয়ে থাকেন। এবং এই স্তরে কোন খতিয়ানে কোন প্রকার ভূল ধরা পড়লে সেটা ৩০ কর্ম দিবসের ভিতরে নির্ধারিত ফর্মে সরকারি ফি প্রদান করে সেটেলমেন্ট অফিসারের নিকট আপত্তি দাখিল করতে হয়।
(ঝ): আপত্তি দাখিল: খতিয়ান ও নকশা দেখার পর যদি কাহারোর কোন আপত্তি থাকে -তবে প্রজাস্বত্ব বিধিমালার ৩০ বিধি মোতাবেক খসড়া প্রকাশনা চলাকালীন তিনি নির্দিষ্ট ফর্মে নির্দৃষ্ট কোর্ট-ফি লাগিয়ে আপত্তি দায়ের করতে পারেন। খসড়া প্রকাশনের সময় পার হওয়ার পর একজন সরকারি সেটেলমেন্ট অফিসার দায়ের কৃত আপত্তিগুলো শুনানি দিয়ে আপত্তি নিষ্পত্তি করবেন প্রয়োজনে তিনি খতিয়ান ও নকশা সংশোধন করতে পারেন। এই স্তরে খতিয়ান এবং নকশা সংশোধনের ক্ষেত্রে সেটেলমেন্ট অফিসার বেগুনি কালারের কালি ব্যবহার করবেন।
(ঞ): আপিল দায়ের: একটি মৌজার সকল আপত্তি নিষ্পত্তি হওয়ার পর উক্ত আপত্তি ও প্রদত্ত সিদ্ধান্তকে কেউ ক্ষুদ্ধ হলে বা ভুল হলে তিনি উক্ত সিদ্ধান্ত প্রদানের বিরুদ্ধে ৩০ দিনের মধ্যে নির্ধারিত ফরমে ফি প্রদান করে সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসারের কাছে আপিল দায়ের করতে পারেন। সেক্ষেত্রে
আপিল দায়ের করার সময় আপত্তি আদেশের একটি অনলিপি – আপিলের সাথে দাখিল করতে হবে উক্ত আপত্তি আদেশের সই মুহুরী নকল সংগ্রহ করার জন্য যে সময় লাগবে তা বাদ দিয়ে আগামী ৩০ দিন আপিল দায়ের করার সময় বলে বিবেচিত হবে।
প্রজাস্বত্ব বিধিমালার ৩১ বিধি মোতাবেক আপিল স্তরের কাজ শুরু হয়। কিন্তু কোন আপত্তি কেস নিষ্পত্তি হওয়ার পর ৩০ দিনের মধ্যে আপিল দায়ের করতে হয় । নির্দিষ্ট ফর্মে নির্দৃষ্ট কোর্ট-ফি লাগিয়ে আপিল দায়ের করতে হয় ।
(ট): চূড়ান্ত যাচ: কোন মৌজার আপিল স্তর শেষ হওয়ার পর উক্ত কার্যালয়ে ঐ মৌজাটির – খতিয়ান – নকশা – পরীক্ষা- নিরীক্ষা করা হয়। এই কাজ করেন একজন অভিজ্ঞ যাচ মোহরারগণ। এক জন কর্মকর্তা তাদের কাজ তত্ত্বাবধান করেন । এই স্তরে করণিক ত্রুটি- অতি সাধারণ ত্রুটি – বা গাণিতিক ত্রুটির – সংশোধন করা যায়।
(ঠ): চূড়ান্ত প্রকাশ : চূড়ান্ত যাচ স্তরের পর নকশা ও খতিয়ান ছাপানো হয় – এবং এরপর প্রজাস্বত্ব বিধিমালা ৩৩ বিধি মোতাবেক চূড়ান্ত প্রকাশনা কার্যক্রম গৃহীত হয় -১ মাসের জন্য প্রকাশ্য স্থানের চূড়ান্ত প্রকাশনা দেওয়া হয়। এ সময় ভূমির মালিকগণ তা দেখেন এবং প্রিন্টগত কোন ত্রুটি থাকলে তা কর্তৃপক্ষকে জানান – ত্রুটি যথাযথ বিবেচিত হলে সেটেলমেন্ট অফিসার তা ঠিক করে দেন। চূড়ান্ত প্রকাশনা হওয়ার পর ৬০ দিন অতিবাহিত হলে সেটেলমেন্ট অফিসার প্রজাস্বত্ব বিধিমালা ৩৪ নম্বর বিধি মোতাবেক খতিয়ান চূড়ান্ত প্রকাশিত হয়েছে বলে প্রত্যায়ন করবেন।
অতঃপর উক্ত নকশা – খতিয়ান পূর্ণ নকশা ও খতিয়ানের মর্যাদা লাভ করেন। সরকার গ্যাজেট ও বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চূড়ান্ত প্রকাশনার ঘোষণা দেন এবং তাহা প্রমাণ্য দলিল হিসেবে গৃহীত হয়। সকল কার্যালয় থেকে পূর্বের নকশা ও খতিয়ান সরিয়ে তার স্থানে চূড়ান্ত প্রকাশিত নতুন নকশা ও খতিয়ান রাখা হয় । এবং তখন থেকে এটাকে ভূমির সত্যলিপি বলে গণ্য করা হয়।
১৯৫০ সালের জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের ১৪৪ ধারার বিধান ও ১৯৫৫ সালের প্রশাসত্ব বিধিমালা ৩৫ বিধি মোতাবেক এই সত্য লিপি শুদ্ধতার সাথে আইনগত ক্ষমতা লাভ করেন এবং একে ভুল প্রমাণিত না করা পর্যন্ত এটাকে শুদ্ধ বলিয়া আইনগত ভাবে মেনে নিতে হবে।
সময়কাল: উপরে আলোচিত স্তরগুলো পার হতে তিন থেকে চার বছর সময় লাগার কথা কিন্তু প্রায় বাস্তবে ৮ থেকে ১০ বছর সময়ও লেগে যায় এখানে একটি বিষয়ে উল্লেখ করা প্রয়োজন তা হলো একটি মোজার একটি স্তরের সকল কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত – ঐ মৌজার অন্য স্তরের কাজ করা যাবে না।